অর্ডার

২৬ সেপ, ২০১৫

ফরক্সে যত আলোচনা বা যত শিক্ষা সবই কিন্তু ট্রেড করে প্রফিটের উদ্দেশ্যে। আর এই ট্রেড মানে হল বায় অর্ডার অথবা সেল অর্ডার। ফরেক্স মার্কেটে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বায় অর্ডার এবং সেল অর্ডার কথাগুলো বেশি রিলেভেন্ট। আমরা কখনও বায় অর্ডার করব কখনও বা সেল অর্ডার করব এটাই তো আমাদের মূল কাজ। আসুন এবার জেনে নিই এই অর্ডারগুলো আসলে কিভাবে কাজ করে।
ফরক্সে অর্ডার বলতে বোঝায় আপনি কখন ট্রেডে ঢুকবেন এবং কখন ট্রেড থেকে বের হবেন। কত প্রফিট করবেন এবং কতটুকু লস মেনে নিবেন ইত্যাদি ।
 EUR / USD
Bid
Ask
1.4502
1.4505
Sell
Buy
উপরের কারেন্সি পেয়ারটি খেয়াল করুন,
EUR সেল / বিড = 1.4502 এবং USD বায় / আস্ক = 1.4505
ফরেক্স মার্কেটে প্রত্যেকটি অর্ডারের মানে হল তার বিপরীত আরেকটি ট্রেড সয়ংক্রিয়ভাবে ঘটা। যা আপনার পরিলক্ষিত হবে না। এটাই ফরেক্সের সিস্টেম। আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আপনি বায় এবং সেলের মাধ্যমে মুলত একটি কারেন্সি দিয়ে আরেকটি কারেন্সিই সবসময় এক্সচেঞ্জ / বিনিময় করছেন। যেখানে আপনি এবং ব্রোকার দুটি পক্ষ।

বিডঃ
====================================================
বিড হল বায়ার পয়েন্ট অব ভিউ এবং সেল হল আপনার / ট্রেডারের পয়েন্ট অব ভিউ অর্থাৎ বায়ার এই রেটে বায় করতে রাজি আছে আপনি চাইলে এই রেটে সেল করতে পারবেন।

আস্কঃ
====================================================
আস্ক হল বায়ার পয়েন্ট অব ভিউ এবং বায় হল আপনার / ট্রেডারের পয়েন্ট অব ভিউ অর্থাৎ বায়ার এই রেটে সেল করতে রাজি আছে আপনি চাইলে এই রেটে বায় করতে পারবেন।

বায় অর্ডার প্রফিটঃ
====================================================
আপনি যখন বায় অর্ডার দেন তার মানে হল কৌওট কারেন্সি সেল করে বেস কারেন্সি ক্রয় করছেন। বিষয়টি নিপুনভাবেই ঘটবে। উপরের কারেন্সি পেয়ারটির মতে, আপনি বায় অর্ডার দিয়েছেন অর্থাৎ ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য আপনি ১.৪৫০৫ পরিমাণ কৌওট কারেন্সি (ডলার) দিচ্ছেন।
        পরবর্তীতে দেখলেন প্রাইস ভেলু বেড়ে ১.৪৬০৫ উঠেছে তখন আপনি ট্রেডটি ক্লোজ করে দিলেন অর্থাৎ আপনি বেস কারেন্সি সেল করে ঐ পরিমাণ কৌওট কারেন্সি ক্রয় করছেন। ১ EUR ১.৪৫০৫ ডলারে কিনে ১.৪৬০৫ ডলারে ক্রয়কৃত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলেন এবং ১০০ পিপস প্রফিট করলেন।

 সেল অর্ডার প্রফিটঃ
====================================================
আপনি যখন সেল অর্ডার দেন তারমানে হল বেস কারেন্সি সেল করে কৌওট কারেন্সি রিসিভ করছেন। এখানেও বিষয়টি নিপুনভাবে ঘটে। ধরি, এই মুহূর্তে EUR / USD মার্কেট প্রাইস ১.৪৫০২ ,আপনি বুঝতে পারলেন আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই প্রাইস আরও কমবে। এখন আপনি লাভ করতে চান, তাহলে EUR / USD সেল মোডে অর্ডার করুন, সেলের মানে হল আপনি EUR সেল করে USD ক্রয় করছেন, তাহলে ১ EUR সেল করে আপনি পাচ্ছেন ১.৪৫০২ ডলার।
        পরবর্তীতে যখন প্রাইস কমে গিয়ে ১.৪৪০২-এ নেমে আসল তখন আপনি ট্রেড ক্লোজ করে দিন। ট্রেড ক্লোজ করার মানে হল আপনি আপনার ডলারগুলো সেল করে সেই পরিমাণ EUR কিনে নিলেন। তাহলে পতন হল ১০০ পিপসের অর্থাৎ আপনি  কয়েক ঘন্টা আগে ১ EUR সেল করে পেলেন ১.৪৫০২ ডলার আর এখন সেই ১ EUR কেনার জন্য আপনাকে দিতে হল তার চেয়ে কম ১.৪৪০২ ডলার।

টেইক প্রফিট (TP) / স্টপ লস (SL):
====================================================
আপনি যদি কোন ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ না করে আটোমেটিক ভাবে ক্লোজ করতে চান তখন আপনি টেইক প্রফিট বা স্টপ লস  ব্যবহার করতে পারেন।
মনে করুন আপনি একটি বায় ট্রেড ওপেন করেছেন ১.৩৫০০ এই ট্রেড থেকে যদি আপনি ৫০ পিপস প্রফিট করেন তাহলে আপনাকে ১.৩৫৫০ আসার পর ক্লোজ করতে হবে, এখন এমন অবস্থা যে আপনার ট্রেডের সামনেও বসে থাকার মত সময় নেই ঠিক তখন আপনাকে ট্রেডটি মডিফাই করে ১.৩৫৫০ তে সেভ করে দিতে হবে, ব্যাশ এবার আপনাকে আর ম্যানুয়ালি ট্রেডটি ক্লোজ করতে হবে না, প্রাইস যখনই আপনার টার্গেট রেট টাচ করবে ট্রেডটি ৫০ পিপস প্রফিট নিয়ে নিজে নিজে ক্লোজ হয়ে যাবে।
ঠিক একই ভাবে আপনি চিন্তা করলেন যে আপনার ট্রেডটি যদি লসে যায় তাহলে ৩০ পিপস লস করে তা অটোমেটিক ক্লোজ হয়ে যাক, সেইক্ষেত্রেও আপনাকে ট্রেডটি মডিফাই করে আপনার ওপেন রেট থেকে কমিয়ে অর্থাৎ ১.৩৪৭০ তে সেভ করে দিতে হবে।
আপনার সেল অর্ডারের ক্ষেত্রে একইভাবে প্রফিটের জন্য ওপেন প্রাইসের নিয়ে টেইক প্রফিট সেট করুন এবং ওপেন প্রাইসের উপরে স্টপ লস সেট করুন।
পেন্ডিং অর্ডারঃ
====================================================
পেন্ডিং অর্ডার হল পুরপুরি স্বয়ংক্রিয় ভাবে আপনার ট্রেডটি ওপেনসহ টেক প্রফিট, স্টপ লস এবং ক্লোজ সবকিছুই আটোমেটিক ভাবে করা।
বেসিক কনসেপ্ট তো পেয়ে গেলেন আসুন এবার একটু প্রাকটিকেল ফিল্ড থেকে ঘুরে আসি। এখন দেখাব কিভাবে একটি ডেমো একাউন্ট ওপেন করে এতক্ষণ যা শিখলেন তার বাস্তব রূপটা দেখে নেওয়া যায়।
ওহ! বলতে ভুলে গিয়েছি, ডেমো একাউন্ট হল পুরোপুরি আপনার একটা রিয়েল একাউন্টের সমরূপ। পার্থক্যটা হল ডেমো একাউন্টে আপনি ভার্চুয়াল মানি দিয়ে ট্রেড করতে পারবেন। আর রিয়েল একাউন্টে আপনাকে রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করতে হবে।
তবে যারা ফরেক্সে নতুন পা দিয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ ভুলেও প্রথম অবস্থাই রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করতে যাবেন না। ভালভাবে বিষয়টি জেনে মিনিমাম ৩ মাসের একটা ভাল অনুশীলন এবং প্রাকটিকেল অভিজ্ঞতা না নিয়ে রিয়েল ট্রেড করবেন না। মোট কথা যতক্ষণ বা যতদিন পর্যন্তও আপনি ডেমো একাউন্টে এভারেজে প্রফিট রাখতে রাখছেন না ততদিন পর্যন্ত রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করার দরকার নেই।
ডেমো ট্রেড আর রিয়েল ট্রেড যে ট্রেডই করুন বা কেন আপনার ট্রেডিং ফ্লাটফর্ম বা মেটা ট্রেডার সফটওয়্যারটি লাগবে। মেটা ট্রেডার হল ট্রেডের মূল হাতিয়ার। আপনার সবকিছুই এই সফটওয়্যারের একটা একাউন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যোগাযোগ

নাম

ইমেল *

বার্তা *